শরণখোলায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ১৫ হাজার শিক্ষার্থী

টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে মানসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নেই। টয়লেটগুলোর পরিবেশ নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে। বিদ্যালয়ের প্রধান ও তদারকির দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আন্তরিক না হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্যানিটেশনের এ অব্যবস্থাপনা বিদ্যমান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরণখোলা উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার ১১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যরক্ষায় তেমন কোনো উদ্যোগ নেই প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের।

স্যানিটেশন নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো জানায়, উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ বিদ্যালয়ের টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী। অনেক বিদ্যালয়ে টয়লেট না থাকায় বিদ্যালয়সংলগ্ন বাসিন্দাদের বাসা-বাড়ির টয়লেট ব্যবহার করছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, অধিকাংশ বিদ্যালয়ের টয়লেটে আলো নেই, পানি নেই। নোংরা ও স্যাঁতসেঁতে টয়লেটগুলো দুর্গন্ধযুক্ত। ময়লা-আবর্জনার কারণে মশার ছড়াছড়ি। এসব টয়লেটে সাবান কিংবা হ্যান্ডওয়াশ নেই। ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হচ্ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করেছেন অভিভাবকরা। তাদের মতে, শিশু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার ছিল সংশ্লিষ্টদের। রায়েন্দা মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জিয়াউল হাসান বাচ্চু বলেন, এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সচেতনতামূলক সভা করা উচিত।
উপজেলার ৯৪নং মধ্য ধানসাগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিউলি রানী বলেন, টয়লেট ও বিশুদ্ধ পানির অভাবের বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলে এসব সমস্যার সমাধান হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জামাল মিয়া শোভন বলেন, অপরিষ্কার টয়লেট ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়া, কৃমি ও কলেরাসহ অনেক রোগে আক্রান্ত হয় শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষার্থীদের মানসম্মত টয়লেট ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি।
এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান পাইক বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে উপজেলার বিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত টয়লেট নির্মাণ করা হবে। পাশাপাশি কোনো বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ টয়লেট থাকলে তা মেরামতের নির্দেশ দেয়া আছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post